আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ইন্টারনেট পরিষেবাসমূহ এবং কেব্ল টিভি নেটওয়ার্কিং
ইন্টারনেট পরিষেবাসমূহ এবং কেব্ল টিভি নেটওয়ার্কিং Internet Services and Cable TV Networking
আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো ইন্টারনেট ও কেবল টিভি। যা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা রাখছে। আমরা সকলেই প্রাত্যহিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদান-প্রদান, জ্ঞান অর্জন, সামাজিক যোগাযোগ ও বিনোদনসহ নানাবিধ কারণে ইন্টারনেট ও কেবল টিভি ব্যবহার করছি।
ইন্টারনেট ও কেল টিভি ব্যবহারের পূর্বে তা যথাযথভাবে সংযোগের মাধ্যমে ইনস্টলেশন করা যেমন জরুরি তেমনিভাবে ইহা ব্যবহারের সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যার উদ্ভব হলে তা সমাধান করাও অত্যাবশ্যকীয়। এ অধ্যায়ে আমরা ইন্টারনেট ও কেবল টিভি যথাযথভাবে সংযোগের মাধ্যমে ইনস্টলেশনসহ নানাবিধ সমস্যার সমাধান প্রতি জানার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করব।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
• ইন্টারনেট পরিষেবা ও প্রোটোকল ব্যাখ্যা করতে পারব,
• রাউটার কনফিগার করে স্মার্ট টিভি রিসিভারের সাথে ব্রডব্যান্ড কেবল ও ওয়াই-ফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে পারব।
• কেবুল টিভির ফ্রিকোয়েন্সি স্পেক্ট্রাম ও বিভিন্ন উপাদান শনাক্ত করতে পারব:
• ডিশ অ্যান্টেনার বিভিন্ন উপাদান শনাক্ত করতে পারব
• ডিশ অ্যান্টেনার বিভিন্ন উপাদানের কাজ ব্যাখ্যা করতে পারব
• ডিশ অ্যান্টেনা ইনস্টল করতে পারব
• কেবল ও কেবল টিভি সিস্টেমের ত্রুটিসমূহ শনাক্ত ও মেরামত করতে পারব;
• কাজ শেষ করে কর্মস্থল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে পারব।
এ অধ্যায়ের শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে আমরা চারটি ভব সম্পন্ন করব। এ চারটি জবের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ ও কনফিগারেশন করতে পারব, স্মার্ট টিভি রিসিভারের সাথে ব্রডব্যান্ড ও ওয়াই- ফাই সংযোগ প্রদান করতে পারব, ডিশ অ্যান্টেনা ইনস্টল করতে পারব এবং কেবল টিভি সিস্টেমের ত্রুটি নির্ণয় ও মেরামত করতে পারব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে আমরা প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানব।
ইন্টারনেট পরিষেবাসমূহ ( Internet Services)
ইন্টারনেট পরিষেবা (Internet Services) বলতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা যে সমস্ত সেবা পেয়ে থাকি সেগুলোকেই বোঝায়। ইন্টারনেট সার্ভিসেস বা ইন্টারনেট পরিষেবাসমূহ আমাদেরকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেক্সট, গ্রাফিক্স, শব্দ এবং সফটওয়্যার হিসাবে বিপুল পরিমাণ তথ্য অ্যাক্সেসের অনুমতি দেয়। নিম্নে ইন্টারনেট সার্ভিসের চারটি পরিষেবা দেখানো হলো।
(ক) যোগাযোগ পরিষেবা (Communication Services): বিভিন্ন যোগাযোগ পরিষেবা রয়েছে যা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সাথে তথ্য বিনিময় করে। নিম্নে এ পরিষেবাগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হলো: ১. ইলেকট্রনিক মেইল (Electronic Mail) ইন্টারনেটে ইলেক্ট্রনিক মেইল (Electronic Mail) বৈদ্যুতিক বার্তা প্রেরণে ব্যবহৃত হয়।
২. টেলনেট (Telnet): ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত একটি দূরবর্তী কম্পিউটারে লগ ইন করতে ব্যবহৃত হয়।
৩. নিউজ গ্রুপ (Newsgroup): এটি ইন্টারনেট-ভিত্তিক আলোচনার গ্রুপ। নিউজ গ্রুপে জনগণ বর্তমান প্রেক্ষাপটের উপর আলোচনা করার জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বার্তা পোস্ট করে থাকে ।
৪. ইন্টারনেট রিলে চ্যাট (Internet Relay Chat): বিশ্বজুড়ে মানুষকে রিয়েল টাইমে যোগাযোগ করার
অনুমতি দেয়।
৫. মেইলিং তালিকা (Mailing Lists): ই-মেইলের মাধ্যমে সাধারণ তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গ্রুপকে সংগঠিত (Organize) করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

৬.ইন্টারনেট টেলিফোনি (Internet Telephony): ইন্টারনেট টেলিফোনি (Internet Telephony) ডিওআইপি (VolP-Voice Over Internet Protocol) এর মাধ্যমে যে কোনো পিসিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কথা বলার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদেরকে অনুমতি দেয়।
৭. তাৎক্ষণিক বার্তা (Instant Messaging) ইন্টারনেটের এ সার্ভিসটি ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর মধ্যে রিয়েল টাইম চ্যাট সরবরাহ করে । যেমন: Yahoo Messenger, MSN Messenger ইত্যাদি।
(খ) তথ্য পুনরুদ্ধার পরিষেবা (Information Retrieval Services): ইন্টারনেটে উপস্থিত তথ্যে সহজে প্রবেশের অনুমতি দেয় এমন বেশ কয়েকটি তথ্য পুনরুদ্ধার পরিষেবা রয়েছে। নিম্নে এ পরিষেবাগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হলো-
• ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল ( File Transfer Protocol – FTP): এটি ব্যবহারকারীদেরকে ফাইল স্থানান্তর করতে সক্ষম করে।
• আর্চি (Archie): এটি হচ্ছে সর্বজনীন এফটিপি(FTP) সাইট এবং তাদের সামগ্রীর আপডেট হওয়া ডাটাবেস। এটির নামে একটি ফাইল অনুসন্ধান করতে সহায়তা করে।
গোফার (Gopher): দূরবর্তী সাইটগুলোতে ডাটাবেজ অনুসন্ধান, পুনরুদ্ধার এবং প্রদর্শন করতে ব্যবহৃত হয়।
(গ) ওয়েব পরিষেবা ( Web Services): ওয়েব সার্ভিসেস ( Web Services) ওয়েবের অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের অনুমতি দেয়। ওয়েব পরিষেবা ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশনগুলো সহজেই একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
(ঘ) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (World Wide Web WWW): ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েভ W3 নামেও পরিচিত। এটি ইন্টারনেটে বেশ কয়েকটি সার্ভারে ছড়িয়ে থাকা ডাটাবেজগুলো অ্যাক্সেস করার একটি উপায় সরবরাহ করে। এ নদিতে টেক্সট, গ্রাফিক্স, অডিও, ভিডিও, হাইপারলিংক থাকতে পারে। হাইপারলিঙ্কগুলো ব্যবহারকারীদের নথির মধ্যে চলাচল করতে দেয়।
(ঙ) ভিডিও কনফারেন্সিং (Video Conferencing) vিe কনফারেন্সিং বা ভিডিও টেলিকনফারেন্সিং যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তার বি-মুখী ভিডিও এবং অডিও স্থানান্তর দ্বারা যোগাযোগ করার একটি পদ্ধতি।
ভিডিও কনফারেন্সিং মোড(Modes of Video Conferencing): ভিডিও কনফারেশিং এর দুইটি মোড থাকে। যথা-
১) পরাগ-টু-পয়েন্ট (Paint-to-Palnt): এ কনফারেগিং মোডটি দুটি অবস্থানকে সংযুক্ত করে।
মাল্টি-ডেণ্ট (Multi-Point): এ কনফারেন্সিং মোডটি মাল্টি-পয়েন্ট কন্ট্রোল ইউনিট (MCU- Multi Point Control Unit) এর মাধ্যমে দুটিরও বেশি ব্যবহারকারীর সাথে সংযোগ স্থাপন করে।
আরও দেখুনঃ