মোবাইল ফোন সার্ভিসিং টুলস্, ইকুইপমেন্ট ও কম্পোনেন্টসমূহের ব্যবহার ও টেস্টিং অনুশীলনী

মোবাইল ফোন সার্ভিসিং একটি দক্ষ ও সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া, যেখানে নানা ধরণের টুলস্, ইকুইপমেন্ট এবং কম্পোনেন্টের সঠিক ব্যবহার ও পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অনুশীলনীতে আমরা মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত প্রধান সরঞ্জাম, উপকরণ এবং কম্পোনেন্ট সম্পর্কে ধারণা লাভ করব এবং তাদের কার্যকারিতা ও পরীক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারব।

মোবাইল ফোন সার্ভিসিং টুলস্, ইকুইপমেন্ট ও কম্পোনেন্টসমূহের ব্যবহার ও টেস্টিং অনুশীলনী

 

মোবাইল ফোন সার্ভিসিংঃ টুলস্, ইকুইপমেন্ট ও কম্পোনেন্টসমূহের ব্যবহার ও টেস্টিং অনুশীলনী

 

অনুশীলনী

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। মোবাইল ফোন জেনারেশন কী?
মোবাইল ফোন প্রযুক্তির বিভিন্ন উন্নত ধাপ বা পর্যায়কে মোবাইল ফোন জেনারেশন বলা হয়।

২। রোম কী?
রিড-অনলি মেমোরি, যা ডেটা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে।

৩। ্যাম কী?
র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি, যা অস্থায়ী ডেটা সংরক্ষণ করে এবং দ্রুততর প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

৪। সিপিইউ এর কাজ কী?
মোবাইল ফোনের কেন্দ্রীয় প্রসেসিং ইউনিট যা সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

৫। সিম কী?
সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মোডিউল, যা ফোন ব্যবহারকারীর পরিচয় ও নেটওয়ার্ক সংযোগ সুনিশ্চিত করে।

৬। জিপিএস কী?
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম, যা অবস্থান নির্ধারণ করে।

৭। ব্লুটুথ কী?
ওয়্যারলেস ডেটা আদানপ্রদান প্রযুক্তি, যা ছোট দূরত্বে ডিভাইস সংযোগ করে।

৮। মোবাইল ফোন জেনারেশন কত প্রকার?
সাধারণত ১জি, ২জি, ৩জি, ৪জি এবং ৫জি।

৯। টুলস্ ইকুইপমেন্ট কী?
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি।

১০। কম্পোনেন্ট কী?
মোবাইল ফোনের বিভিন্ন ছোট ছোট অংশ বা উপাদান।

১১। মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত কম্পোনেন্টসমূহের নাম লেখ।
রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ট্রানজিস্টর, ডায়োড, আইসি, স্পীকার, মাইক্রোফোন, ব্যাটারি ইত্যাদি।

১২। মোবাইল ফোন সার্ভিসিং কাজে ব্যবহৃত ইকুইপমেন্টসমূহ তালিকা করো।
সোল্ডারিং আয়রন, মাল্টিমিটার, স্ক্রুড্রাইভার, ক্লিনিং স্পঞ্জ, লুপ, টেস্টিং টুলস্ ইত্যাদি।

১৩। মোবাইল ফোন সার্ভিসিং কাজে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত (পিপিই) এর নাম লেখ।
হাতের গ্লাভস, আই প্রোটেক্টর, ইলেকট্রোস্ট্যাটিক রিস্ট ব্যান্ড ইত্যাদি।

 

মোবাইল ফোন সার্ভিসিংঃ টুলস্, ইকুইপমেন্ট ও কম্পোনেন্টসমূহের ব্যবহার ও টেস্টিং অনুশীলনী

 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। ্যাম রমের মধ্যে পার্থক্য লেখ।

  • ্যাম (RAM): এটি অস্থায়ী মেমোরি, যেখানে ডেটা সাময়িকভাবে সংরক্ষিত হয় এবং পাওয়ার অফ হলে তথ্য মুছে যায়।
  • রম (ROM): এটি স্থায়ী মেমোরি, যেখানে ডেটা স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত হয় এবং পাওয়ার অফ হলেও তথ্য থেকে যায়।

 

২। ্যামের বৈশিষ্ট্য লেখ।

  • দ্রুত ডেটা অ্যাক্সেস করে।
  • অস্থায়ী মেমোরি, পাওয়ার বন্ধ হলে ডেটা মুছে যায়।
  • কম্পিউটারের কাজের গতি বৃদ্ধি করে।
  • র‍্যাম সাইজ বেশি হলে মোবাইল বা কম্পিউটারের পারফরম্যান্স ভালো হয়।

 

google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

রচনামূলক প্রশ্ন

১। মোবাইল ফোনের ব্লক ডায়াগ্রাম অংকন করে প্রতিটি ব্লকের নাম লেখ।

মোবাইল ফোনের সাধারণ ব্লক ডায়াগ্রামটি প্রধানত নিম্নলিখিত অংশ নিয়ে গঠিত:

  • অ্যান্টেনা (Antenna)
  • রিসিভার (Receiver)
  • ট্রান্সমিটার (Transmitter)
  • সিগন্যাল প্রসেসর (Signal Processor)
  • মাইক্রোপ্রসেসর/সিপিইউ (Microprocessor/CPU)
  • মেমোরি (Memory)
  • ডিসপ্লে (Display)
  • কীবোর্ড/ইনপুট (Keyboard/Input)
  • বেটারি (Battery)
  • স্পিকার (Speaker)
  • মাইক্রোফোন (Microphone)
  • কমিউনিকেশন ইন্টারফেস (Communication Interface)

(ডায়াগ্রাম অঙ্কনের জন্য কাগজ বা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।)

 

২। মোবাইল ফোন ব্লক ডায়াগ্রামের প্রতিটি ব্লকের কাজ লেখ।

  • অ্যান্টেনা: সিগন্যাল গ্রহণ ও প্রেরণ করে।
  • রিসিভার: অ্যান্টেনা থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং তা প্রসেস করে।
  • ট্রান্সমিটার: ডেটা বা সিগন্যাল প্রেরণ করে।
  • সিগন্যাল প্রসেসর: সিগন্যাল এনকোডিং ও ডিকোডিং করে, শব্দ ও ডেটা প্রক্রিয়া করে।
  • মাইক্রোপ্রসেসর/সিপিইউ: মোবাইল ফোনের সমস্ত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মেমোরি: তথ্য সংরক্ষণ করে।
  • ডিসপ্লে: ব্যবহারকারীর জন্য তথ্য প্রদর্শন করে।
  • কীবোর্ড/ইনপুট: ব্যবহারকারীর নির্দেশ গ্রহণ করে।
  • বেটারি: মোবাইল ফোনের শক্তি সরবরাহ করে।
  • স্পিকার: শব্দ প্রকাশ করে।
  • মাইক্রোফোন: শব্দ গ্রহণ করে।
  • কমিউনিকেশন ইন্টারফেস: মোবাইল ফোনকে অন্য ডিভাইস বা নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ করে।

 

৩। মোবাইল ফোনের জেনারেশন বর্ণনা করো।

মোবাইল ফোনের উন্নতি ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অনুযায়ী বিভিন্ন জেনারেশন তৈরি হয়েছে:

  • ১জি (1G): এনালগ সিগন্যাল প্রযুক্তি, কেবল ভয়েস কল সেবা প্রদান করত।
  • ২জি (2G): ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়, ভয়েস কল ও এসএমএস সেবা চালু হয়।
  • ৩জি (3G): উচ্চগতির ডেটা সেবা এবং ভিডিও কল চালু করে।
  • ৪জি (4G): আরও দ্রুত ইন্টারনেট সেবা এবং উন্নত মাল্টিমিডিয়া সুবিধা দেয়।
  • ৫জি (5G): অত্যন্ত দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার, কম লেটেন্সি এবং উন্নত নেটওয়ার্ক সক্ষমতা।

 

৪। মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত কম্পোনেন্টসমূহের কাজ বর্ণনা করো।

  • সিপিইউ: মোবাইলের সকল প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • র্যাম: অস্থায়ী তথ্য সংরক্ষণ ও দ্রুত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে।
  • রম: স্থায়ী তথ্য সংরক্ষণ করে।
  • স্ক্রীন: তথ্য প্রদর্শন করে।
  • ক্যামেরা: ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
  • ব্যাটারি: শক্তি সরবরাহ করে।
  • মাইক্রোফোন: ব্যবহারকারীর কথা সংগ্রহ করে।
  • স্পিকার: শব্দ বের করে।
  • সিম কার্ড: নেটওয়ার্কে ফোনের পরিচয় দেয়।
  • সেন্সর: গতি, আলোর মাত্রা, প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করে।

 

৫। মোবাইল ফোন সার্ভিসিং কাজে ব্যবহৃত ইকুইপমেন্টসমূহের ব্যবহার বর্ণনা করো।

  • সোল্ডারিং আয়রন: কম্পোনেন্ট সংযুক্ত বা বিচ্ছিন্ন করতে ব্যবহৃত।
  • মাল্টিমিটার: বৈদ্যুতিক পরিমাপ যেমন ভোল্টেজ, কারেন্ট ও রেজিস্ট্যান্স মাপতে ব্যবহৃত।
  • স্ক্রু ড্রাইভার: ছোট স্ক্রু ঢোকানো বা খুলতে ব্যবহৃত।
  • পেন্স, টুইজার: ক্ষুদ্র কম্পোনেন্ট ধরে বা সরাতে।
  • ক্লিনিং স্পঞ্জ: সোল্ডারিং আয়রনের বিট পরিষ্কার করতে।
  • আইসিটেস্টার: এলসিডি টেস্ট করতে ব্যবহৃত।
  • হট এয়ার গুন: কম্পোনেন্ট ডিসোল্ডারিং বা রিপ্লেস করতে।
  • পাওয়ার সাপ্লাই: সার্কিটে সঠিক ভোল্টেজ সরবরাহের জন্য।

 

৬। মোবাইল ফোনের কম্পোনেন্ট পরীক্ষা পদ্ধতি বর্ণনা করো।

কম্পোনেন্ট পরীক্ষায় সাধারণত মাল্টিমিটার ব্যবহৃত হয়। পদ্ধতিগুলো হলো:

  • রেজিস্টর পরীক্ষা: মাল্টিমিটার ওহম রেঞ্জে সেট করে দুই প্রান্ত সংযোগ করে রেজিস্ট্যান্স মাপা হয়।
  • ক্যাপাসিটর পরীক্ষা: ক্যাপাসিটরের দুই টার্মিনালে মাল্টিমিটার প্রোব সংযোগ করে ক্যাপাসিট্যান্স যাচাই করা হয়।
  • ডায়োড পরীক্ষা: মাল্টিমিটার ডায়োড মোডে রেখে ফরোয়ার্ড ও রিভার্স বায়াসে রিডিং নেয়া হয়।
  • ট্রানজিস্টর পরীক্ষা: বেস টার্মিনাল কমন করে অন্য দুই টার্মিনালের রিডিং নিয়ে ট্রানজিস্টর ধরণ নির্ণয় করা হয়।
  • আইসি পরীক্ষা: আইসির পিন অনুযায়ী রেজিস্ট্যান্স মাপা হয় বা ফাংশনাল টেস্টিং করা হয়।
  • ফিউজ, স্পিকার, মাইক্রোফোন, ভাইব্রেটর পরীক্ষা: মাল্টিমিটার দিয়ে কন্ডাক্টিভিটি বা রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করা হয়।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment