আজকে আমরা ব্যবহারিক ১ঃ সিআরটি কালার টিভির পাওয়ার সাপ্লাই সেকশনের ত্রুটি নির্ণয় ও মেরামতকরণ সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা জেনারেল ইলেকট্রনিক্স ১ এর টেলিভিশন সার্ভিসিং অংশের অন্তর্গত।
Table of Contents
ব্যবহারিক ১ঃ সিআরটি কালার টিভির পাওয়ার সাপ্লাই সেকশনের ত্রুটি নির্ণয় ও মেরামতকরণ
এটির উপকরণ ব্যবহার করে একজন শিক্ষার্থী সিআরটি কালার টিভির পাওয়ার সাপ্লাই সেকশনের ত্রুটি নির্ণয় ও মেরামত করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
পারদর্শিতার মানদণ্ড:
- স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপি) পরিধান করা।
- লিখারটি কালার টিভি মেরামত ও সার্ভিসিং করা
- সিআরটি কালার টিভির পাওয়ার সাপ্লাই সেকশনের ত্রুটি শনাক্ত করা
- সিআরটি কালার টিভির পাওয়ার সাপ্লাই সেকশন মেরামত করা:
- কর্মক্ষেত্রের নিজস্ব বিধি অনুসারে টুলস ও মালামাল পরিস্কার করে নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা:
- কর্মক্ষেত্রের বিধি অনুযায়ী বর্জ্যসমূহ নির্ধারিত স্থানে অপসারণ বা সংরক্ষণ করা।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই):
ক্রমিক নং | সুরক্ষা সরঞ্জামের নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
১ | ফেস মাস্ক | সার্জিক্যাল | ০১ টি |
২ | ইন্ডাস্ট্রিয়াল হ্যান্ড গ্লোভস | কর্মক্ষেত্রের বিধি অনুযায়ী | ০১ টি |
৩ | অ্যাপ্রোন | কর্মক্ষেত্রের বিধি অনুযায়ী | ০১ টি |
৪ | প্রোটেকটিভ গগলস | কর্মক্ষেত্রের বিধি অনুযায়ী | ০১ টি |
৫ | সেফটি সুজ | কর্মক্ষেত্রের বিধি অনুযায়ী | ০১ জোড়া |
৬ | ইলেকট্রোস্ট্যাটিক ডিসচার্জ ম্যাট | স্ট্যান্ডার্ড | ০১ টি |
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি:
ক্রমিক নং | যন্ত্রপাতির নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
১ | সোল্ডারিং আয়রন | ৪৫ ওয়াট/২২০ভোল্ট | ০১টি |
২ | ডি-সোল্ডারিং পাম্প বা সাকার | স্ট্যান্ডার্ড | ০১টি |
৩ | স্ক্রু ড্রাইভার | স্ট্যান্ডার্ড | ০১টি |
৪ | লং নোজ প্লায়ার্স | ৮ ইঞ্চি হাই কোয়ালিটি | ০১টি |
৫ | কাটিং প্লায়ার্স | ৮ ইঞ্চি হাই প্রিসিসন | ০১টি |
৬ | এভোমিটার অ্যানালগ | NMA YX-360TR | ০১টি |
৭ | এভোমিটার ডিজিটাল | Sanwa CD800a বা সমতুল্য | ০১টি |
প্রয়োজনীয় কাঁচামাল:
ক্রমিক নং | কাঁচামালের নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
১ | ট্রানজিস্টর | BC 547, BC 557, D2498 | ৩টি |
২ | রেজিস্টর | 1K 2.2 K 3.3K 10 k | ৪টি |
৩ | ক্যাপাসিটর | 104 PF, 1µF, 2.2 µF, 120 µF | ৪টি |
৪ | রেকটিফায়ার ডায়োড | 1N4001, 1N4007 | ২টি |
৫ | জিনার ডায়োড | 5.5V, 7.8V,12V | ৩টি |
৬ | এলইডি | 5mm | ১টি |
৭ | টিভি রিসিভারের সার্কিট ডায়াগ্রাম | Samsung CRT TV বা সমতুল্য | ১টি |
৮ | চপার ট্রান্সফরমার | ইনপুট: ২২০ ভোল্ট আউটপুট: ১১০ ভোল্ট, ২৪ ভোল্ট, ১২ ভোল্ট | ১টি |

প্রয়োজনীয় ব্লক এবং সার্কিট ডায়াগ্রাম:
কাজের ধারা :
১. ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) পরিধান করবে।
২. কালার টিভি ডি-অ্যাসেম্বল করে পাওয়ার সাপ্লাই সেকশন শনাক্ত করবে।
৩. পাওয়ার সাপ্লাই সেকশনের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট শনাক্ত করবে।
৪. ফিউজ পরীক্ষা করবে ।
৫. সুইচ পরীক্ষা করবে ।
৬. মাল্টিমিটারকে ভোল্টেজ রেঞ্জে সেট করবে ।
৭. পাওয়ার সরবরাহ করে পাওয়ার সাপ্লাইয়ে আউটপুট হাই-ভোল্টেজ (১১০ ভোল্ট হতে ১৮০ ভোল্ট) এবং লো-ভোল্টেজ (১২ ভোল্ট ও ২৪ ভোল্ট) পরীক্ষা করবে ।
৮. ভোল্টেজ পরিমাপ করে ত্রুটি শনাক্ত করবে ।
৯. কম্পোনেন্ট পরীক্ষা করার জন্য মাল্টিমিটারকে ওহম রেঞ্জে সেট করবে ।
১০. মাল্টিমিটার দ্বারা পরিমাপ করে ত্রুটিযুক্ত কম্পোনেন্ট শনাক্ত করে তা পরিবর্তন করবে ।
১১. টিভি অ্যাসেম্বল করবে ।
১২. পুনরায় পাওয়ার সরবরাহ করে পরীক্ষা করবে ।
১৩. টুলস ও ইকুইপমেন্টসমূহ পরিষ্কার করে নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করবে।
১৪. বর্জ্যসমূহ নির্ধারিত স্থানে অপসারণ/ সংরক্ষণ করবে।
পাওয়ার সেকশনের প্রধান কম্পোনেন্টঃ
১। ফিউজ
২। অন-অফ সুইচ
৩। ব্রীজ রেকটিফায়ার
৪। ফিল্টার ক্যাপাসিটর
৫। পাওয়ার ট্রানজিস্টর
৬। চপার ট্রান্সফরমার
৭। জিনার ডায়োড
৮। ভেরিয়্যাবল রেজিস্টর (B+ Adjust)
৯ । পিসি আইসি
পাওয়ার সেকশনের প্রধান কম্পোনেন্টগুলো পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা করে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ত্রুটি শনাক্ত
করে তা মেরামত করবে।
১. ত্রুটির লক্ষণ দেখে কোন স্টেজে বা কোন সেকশনে ত্রুটি আছে তা শনাক্ত করবে।
২. এবারে সেই স্টেজ বা সেকশনের ঠিক কোন জায়গায় ত্রুটি বা কোন কম্পোনেন্ট খারাপ সেটা শনাক্ত করবে।
৩. এজন্য আইসির বিভিন্ন পিনের, ট্রানজিস্টরের বিভিন্ন লিডের এবং সার্কিটের বিভিন্ন টেস্টিং পয়েন্টের (TP) ভোল্টেজ পরিমাপ করবে।
৪. এ ছাড়া সার্কিট, আইসি, ট্রানজিস্টর প্রভৃতির কারেন্ট এবং সার্কিটের বিভিন্ন পয়েন্টের মধ্যে রোধের (রেজিস্ট্যান্স) পরিমাপ করবে। বিভিন্ন সেকশনের আইসি ট্রানজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ডায়োড, কানেকটিং তার, পিসিবি (PCB) প্রভৃতি খারাপ থাকার জন্য টিভি সেটে ত্রুটি দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ রকম কোন কম্পোনেন্ট খারাপ থাকার জন্য সার্কিটের বিভিন্ন জায়গায় অস্বাভাবিক ভোল্টেজ (ডিসি) পাওয়া যাবে। সুতরাং ত্রুটি নির্ণয় করার জন্য ভোল্টেজ, কারেন্ট ও রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা করা প্রয়োজন ।
ভোল্টেজ পরীক্ষা:
ট্রানজিস্টর ও আইসির বিভিন্ন লিড ও পিনে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডিসি ভোল্টেজ সরবরাহ করা হয়, যাতে উহা সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন স্টেজে ত্রুটি দেখা দিলে সাধারণত আইসি বা ট্রানজিস্টরের পিন বা লিডের ভোল্টেজ পরিবর্তিত হয়ে যায়। আর কোন পয়েন্টের ভোল্টেজ অস্বাভাবিক হলে সেই পয়েন্টের সংলগ্ন সার্কিট বা কম্পোনেন্ট পরীক্ষা করতে হয়।
রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা:
এ ছাড়া খারাপ পার্টস খুঁজে বের করার জন্য সার্কিটের মধ্যে রেজিস্ট্যান্স কত তা জানার প্রয়োজন হয় ।
কারেন্ট পরীক্ষা:
আবার প্রয়োজনে সার্কিটের কোন একটি অংশের মধ্যে কারেন্ট প্রবাহের পরিমাণও মাপার প্রয়োজন হয়। সবশেষে সন্দেহজনক পার্টস খুলে পরীক্ষা করতে হবে বা পরিবর্তন করে দেখতে হয়।
আইসির ভোল্টেজ পরীক্ষা:
সাধারণত বেশিরভাগ আইসিতে ভোল্টেজ সরবরাহ করা হয় আইসির একটি বিশেষ পিনে (প্রধান সাপ্লাই পিনে) অথবা কয়েকটি বিশেষ পিনে । এ ভোল্টেজের জন্য আইসির অন্যান্য পিনে ভোল্টেজ পাওয়া যায়। আইসির একটি বিশেষ পিনের অথবা কয়েকটা পিনের ভোল্টেজ যদি অস্বাভাবিক হয় তাহলে বুঝতে হবে সেই পিন সংলগ্ন কোন একটি কম্পোনেন্ট বা কয়েকটি অথবা আইসি ত্রুটিযুক্ত। তবে আইসি পরিবর্তন করার আগে আইসির সাথে সংযুক্ত কম্পোনেন্ট সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
কোনো ভোল্টেজ নেই বা ভোল্টেজ কম আছে:
যদি কোনো সার্কিটের প্রধান কোনো পয়েন্টে কোন ভোল্টেজ না থাকে তাহলে সেই স্টেজ বা সেকশন কোনো কাজ করবে না। এর ফলে সেটে কোনো আওয়াজ নাও থাকতে পারে, কোনো ছবি নাও আসতে পারে। এমনকি কোনো রাস্টার নাও থাকতে পারে অথবা অস্বাভাবিক হতে পারে।
অবশ্য এটি নির্ভর করবে কোন স্টেজের ত্রুটি তার উপরে।
যদি কোনো স্টেজের সাপ্লাই ভোল্টেজ কম হয় তাহলে সেই স্টেজ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। যার ফলে ছবি অস্পষ্ট ও আওয়াজ কম হয় অথবা ছবি দৈর্ঘ্যে বা প্রন্থে ছোট হয়।
পাওয়ার সাপ্লাই সার্কিটের বিশেষ কোন পয়েন্টে ভোল্টেজ না থাকা বা ভোল্টেজ কম থাকার কারণগুলো নিয়ে উল্লেখ করা হলো ঃ
ভোল্টেজ নেই:
(১) ভোল্টেজ ড্রপিং অথবা কাপলিং রেজিস্ট্যান্স ওপেন ।
(২) বাইপাস বা ফিল্টারিং ক্যাপাসিটর শর্ট হয়েছে।
(৩) জিনার ডায়োড শর্ট হয়েছে।
(৪) লুস কানেকশন (Loose Connection) তার বা ড্রাই সোল্ডার থাকা ।
(৫) খারাপ রেক্টিফায়ার ডায়োড ।
(৬) ফিউজ কাটা ।
(৭) ভোল্টেজ রেগুলেটর ট্রানজিস্টর খারাপ।
(৮) আইসি ভোল্টেজ কম বা আইসি খারাপ।
(৯) সিরিজে ব্যবহৃত কিছু রেজিস্ট্যান্সের মান বেড়ে যাওয়া ।
(১০) বাইপাস, ফিল্টারিং ক্যাপাসিটর লিকেজ থাকা ।
(১১) ট্রানজিস্টর খারাপ ।
(১২) আইসি নষ্ট (এটা সাধারণত আইসির ভিতরের সার্কিট শর্ট বা ওপেনের জন্য হয়)
প্রয়োজনীয় টেস্ট চিত্র:
সার্কিট টেস্ট পর্যবেক্ষণ তথ্য ছকঃ
সতর্কতা :
- কাজের শুরুতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ব্যবহার করা ।
- টেলিভিশন সার্ভিসিং এ ব্যবহৃত টুলস ও ইকুইপমেন্টসমূহ সতর্কভাবে সংগ্রহ ক
- পাওয়ার সরবরাহ অবস্থায় সাবধানতার সহিত ভোল্টেজ পরিমাপ করা ।
- মাল্টিমিটার সঠিকভাবে এডজাস্টমেন্ট করা ।
- সাবধানতার সহিত অ্যাসেম্বল এবং ডি-অ্যাসেম্বল করা ।
- ভোল্টেজ পরিমাপ করার সময় সতর্ক থাকা যেন শর্ট সার্কিট তৈরি না হয় ।
- কম্পোনেন্ট পরিবর্তনের সময় পাওয়ার সরবরাহ বন্ধ করা ।
আরও দেখুনঃ