বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ । যা জেনারেল ইলেকট্রনিক্স ১ এর জেনারেল ইলেকট্রনিক্স বিষয়ক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা অংশের অন্তর্গত।

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

শিল্পকারখানায় বিপদ নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শিল্পকারখানার ডিজাইন করা থেকে শুরু করে উৎপাদনের সময় এবং কারখানা বন্ধ করা পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া মেনে চলা হয়। এখানে বিপদ নিয়ন্ত্রণের মূল ও প্রাথমিক ধারণাগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। নিম্নে এ সকল ধারণাগুলো বিবেচনা করে বিপদ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির বর্ণনা করা হয়েছে।

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের ধাপসমূহ (Steps of Hazard Control)

  • বিপদ শনাক্তকরণ;
  • বিপদের তালিকা তৈরি;
  •  বিপদ র‍্যাংকিং করা বা শ্রেণি নির্ধারণ করা;
  •  বিপদের সম্ভাবনা উপলদ্ধি করা;
  • বিপদ দূরীকরণ বা কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা ।

কর্মক্ষেত্রে সৃষ্ট বিপদসমূহকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত এবং তালিকা করতে হবে। এর পরবর্তী ধাপ হলো সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতা অনুসারে বিপদকে র‍্যাংকিং করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে বিপদসমূহকে ঝুঁকির স্তর অনুসারে নিম্ন ক্রমানুসারে র‍্যাংকিং করতে হবে। পরবর্তীতে বিপদের ঝুঁকি দূর করার জন্য ভিন্ন কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিপদকে কম ঝুঁকিপূর্ণ বিপদে রূপান্তর করে বিপদকে দূর করতে হবে। এটি সত্য যে, সকল বিপদ পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রস্তুতি এমনভাবে থাকা উচিত যেন সহজেই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

 

ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) ক্রম বা পর্যায় (Order of Hazard Control)

কর্মক্ষেত্র থেকে ঝুঁকি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হবে। এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। উদাহরণস্বরূপ একটি পরিবেশ থেকে একটি শব্দ সৃষ্টিকারী মেশিন সরিয়ে নিতে হবে।

  • বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে। যেমন- অ্যাজমা বৃদ্ধিকারক পদার্থ থাকবে না এমন পেইন্ট ব্যবহার করতে হবে ।
  • কর্মক্ষেত্র থেকে বিপদ সরিয়ে ফেলা যেমন- কোনো একটি শারীরিক বিপদকে কর্মক্ষেত্র থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য যে স্থানে মেশিনটি ব্যবহৃত হচ্ছে ঐ স্থানকে ঢেকে রাখতে হবে।
  • উৎস থেকে বিপদ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। বিপদের উৎস বন্ধ করার জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির ডিজাইন পুনরায় করতে হবে। গার্ড অথবা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার জন্য পুনরায় ডিজাইন করতে হবে।
  • প্রশাসনিকভাবে নিয়ন্ত্রণ-এটি প্রশাসনিক কৌশল যা কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে । প্রশাসনিকভাবে বিপদ নিয়ন্ত্রণের জন্য দূষিত জায়গায় শ্রমিকদের অল্প সময় ব্যাপী কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি শ্রমিকদের সময় ভাগ করে দিয়ে অথবা অন্য কোনো নিয়ম প্রয়োগ করে করতে হবে।

 

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

 

ঝুঁকি অপসারণ (Removal of Hazard )

যেখানে কোনো বিপদ নেই সেখানে আঘাত পাওয়া বা অসুস্থ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। উদাহরণস্বরূপ-

  • এলোমেলো জঞ্জাল দূর করে হোঁচট খেয়ে পড়ার মতো বিপদ দূর করতে হবে।
  • অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ বর্জন করতে হবে।
  • ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতি পরিহার করতে হবে।
  • ক্ষতিগ্রহ যন্ত্রপাতি অতি দ্রুত মেরামত করতে হবে ।
  • অতিরিক্ত ফটোকপি এবং বই বা পান্ডুলিপির পরিবর্তে ই-মেইলের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
  • ব্যবহারকারীর কর্মযোগ্যতার সাথে নতুন যন্ত্রপাতির সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন (Replacement of Hazard Creation Goods and Equipments)

বিপদ দূর করা সম্ভব না হলে কম ঝুঁকি সম্পন্ন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে। এটি এমনভাবে করতে হবে যেন সন্তোষজনকভাবে একই ধরনের কাজ সম্পাদন করা যায়। যেমন- বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারে পদার্থ ব্যবহার করতে হবে।

যেখানে সব সময় টেলিফোন ব্যবহৃত হয় সেখানে হ্যান্ডসেটের পরিবর্তে হেডসেট ব্যবহার করতে হবে। বাষ্পীয় বিপদ নিয়ন্ত্রণের জন্য কম ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment