আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ওয়ার্কশপে দুর্ঘটনার প্রাকৃতিক কারণ ও প্রতিকার । যা জেনারেল ইলেকট্রনিক্স ১ এর জেনারেল ইলেকট্রনিক্স বিষয়ক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা অংশের অন্তর্গত।
Table of Contents
ওয়ার্কশপে দুর্ঘটনার প্রাকৃতিক কারণ ও প্রতিকার
প্রাকৃতিক কারণসমূহকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন:
বায়ুমণ্ডলীয় দুর্যোগসমূহ :
ঝাড়, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, হ্যারিকেন, জলোচ্ছ্বাস।
ভূ-পৃষ্ঠের সুর্যোগসমূহ:
বন্যা, নদীতীর ভাঙন, উপকূলীর ভাঙন, ভূমিধস, মৃত্তিকা ক্ষয়, অগ্নিকাণ্ড।
ভূগর্ভস্থ দুর্যোগসমূহ
ভূমিকম্প এবং অগ্ন্যুৎপাত।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে প্রতিকারের জন্য ওয়ার্কশপের সকলকে নিম্নলিখিত প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
- ব্যক্তিগত ভূমিকা এবং দায়িত্ব;
- হুমকি, বিপদ, এবং প্রতিরক্ষামূলক কর্ম;
- বিজ্ঞপ্তি, সতর্কতা, এবং যোগাযোগ পদ্ধতি;
- জরুরী অবস্থার মধ্যে পরিবারের সদস্যদের সনাক্ত করার উপায়;
- জরুরী প্রতিক্রিয়া পদ্ধতি;
- নির্বাসন, আশ্রয় এবং জবাবদিহিতা পদ্ধতি;
- অবস্থান এবং সাধারণ জরুরী যন্ত্রপাতি ব্যবহার;
- জরুরী শাটডাউন পদ্ধতি।

ল্যাবে, ওয়ার্কশপে বা কর্মস্থলে জরুরী অবস্থা
একটি কর্মস্থলে জরুরী অবস্থা একটি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি যা কর্মীদের, গ্রাহকদের সমস্যায় ফেলে দেয়; বাধা বা অপারেশন বন্ধ করে দেয় বা শারীরিক বা পরিবেশগত ক্ষতি হয়। জরুরী অবস্থা প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট্য হতে পারে। যেমন:
- বন্যা,
- হ্যারিকেন,
- টর্নেডো,
- আগুন,
- বিষাক্ত গ্যাস রিলিজ
- রাসায়নিক স্পিলস (Spills)
- রেডিও লজিক্যাল দুর্ঘটনা,
- বিস্ফোরণ এবং
- কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা শারীরিক ক্ষতি এবং আঘাত ইত্যাদি।
কর্মীদের ভূমিকা
সর্বোত্তম জরুরী কর্ম পরিকল্পনাগুলো পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা। কোনো জরুরী পরিস্থিতিতে কর্মচারীদের কী করা উচিত তা উল্লেখ করা এবং কর্মীদের জরুরী অবস্থাগুলোর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। যখন পরিকল্পনাগুলোতে কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন সম্ভাব্য বিপদ, খারাপ পরিস্থিতিগুলোর অবস্থা এবং যথাযথ জরুরী প্রতিক্রিয়াগুলো সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা। পরিকল্পনাটি প্রকাশ করার পরে কর্মীদের সাথে এটি পর্যালোচনা করা, যাতে প্রত্যেকের কোনটি আগে জরুরী, আগে এবং পরে কী করা যায় তা নিশ্চিত করা।
জরুরী কর্ম পরিকল্পনাগুলোর একটি কপি ল্যাব/ওয়ার্কশপ/প্রতিষ্ঠানের কোনো সুবিধাজনক স্থানে যেখানে সবাই এটি সহজেই পেতে পারে বা সকলকে একটি অনুলিপি সরবরাহ করে রাখা। কম সংখ্যক ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৌখিকভাবে জরুরী কর্ম পরিকল্পনাটি জানানো যায়।
কর্মচারী তথ্য পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত
জরুরী পরিস্থিতির জন্য কর্মীদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য প্রস্তত করে রাখা একান্ত আবশ্যক। এর মধ্যে তাদের হোম টেলিফোন নম্বর, তাদের পরিবারের সদস্যের নাম, টেলিফোন নম্বর এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য থাকবে।
কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ
কর্মীদেরকে বিভিন্ন ধরণের জরুরী অবস্থাগুলো সম্পর্কে জানানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কর্মক্ষেত্র এবং কর্মশালার আকার, ব্যবহৃত প্রক্রিয়া, উপকরণ এবং বাইরের সংস্থানগুলোর উপলব্ধতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করে। সম্ভাব্য জরুরী অবস্থা, রিপোর্টিং পদ্ধতি, এলার্ম সিস্টেম, নির্বাসন পরিকল্পনা এবং শাটডাউন পদ্ধতিসহ সমস্ত কর্মী, জরুরী কর্ম পরিকল্পনাগুলোর ফাংশন এবং উপাদানগুলোকে বোঝানো নিশ্চিত করা। জ্বলন্ত উপকরণ, বিষাক্ত রাসায়নিক, তেজস্কির উচ্চা বা জল- প্রতিক্রিয়াশীল পদার্থের মতো কোনও বিশেষ বিপদ নিয়ে আলোচনা করা। স্পষ্টত জরুরী সময় কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করা যেন জরুরী অবস্থায় কর্মীরা সাথে থাকে।
আগুন নিভানোর সাধারণ উপার
যেকোনো আগুন লাগার পিছনে বস্তুর দাহ্যতা, প্রজ্বলন তাপমাত্রা এবং বায়ুর মধ্যস্থিত অক্সিজেন এ তিনটির যোগ থাকে। এ তিনটিকে বাহুরুপে অনুমেয় সমকোণী ত্রিভুজকে ফায়ার ট্রাইয়্যাজেল বা অগ্নি ত্রিভুজ বলে। কোনো উপায়ে এদের যেকোনো একটির অভাব ঘটাতে পারলে আগুন নিভে যেতে বাধ্য। আগুন অল্প হলে পানি ও বালু ব্যবহার করে এ কাজ সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। কিন্তু আগুন যেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি হয় সেক্ষেত্রে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার (Fire Extinguisher) নামক সরঞ্জামটি ব্যবহার করা আবশ্যক। এ জন্য প্রতিটি ওয়ার্কশপে অতি নিকটে সর্বদা পানির ব্যবস্থা, বালু ভর্তি বালতি এবং ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার (Fire Extinguisher) রাখা উচিৎ।
আগুন লাগলে করণীয়
পোষাকে আগুন লাগলে দৌড়ানো উচিৎ নয়। দৌড়ালে অক্সিজেনের যোগ বৃদ্ধির জন্য আগুন আরো বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে ভূমিতে শুয়ে পড়ে ক্রমাগত পার্শ্ব পরিবর্তন করে আগুন নিভানোর চেষ্টা করা উচিৎ। যতদূর সম্ভব নিকটবর্তী মুল্যবান বন্ধ কাগজপত্রগুলোকে স্থানান্তর করে নিরাপদ কোন স্থানে রাখতে হবে। দুশ্চিন্তা না করে যা যা করণীয় প্রতিটি কাজ ধৈর্য্যের সাথে করতে হবে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে হবে।
জরুরী অবস্থায় সাড়া দেওয়া এবং খালি করার পদ্ধতি (Emergency Response and Evacuation Procedure)
জরুরী ব্যবস্থাপনার সমন্বয়কারী ক্রিটিক্যাল ইনসিডেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম ও জরুরী পরিকল্পনা এবং পদ্ধতিগুলোর জন্য দায়বদ্ধ। এগুলো একটি সর্ব-বিপদ দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া এবং জরুরী ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা হিসাবে ডিজাইন করা হয়ে থাকে যার মধ্যে রয়েছে পরিকল্পনা, প্রশমন, প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধারের ক্রিয়াকলাপ ।
সাড়া দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার হল:
- মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং নিরাপদ করা,
- ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে প্রস্তুত রাখা,
- সম্পত্তি এবং অবকাঠামো সুরক্ষিত করা,
- পরিবেশ রক্ষা এবং সংরক্ষণ করা।
আরও দেখুনঃ